• বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

বিএনপির ঢাকার সমাবেশ, নয়াপল্টন থাকবে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ সংবাদটির পাঠক ০ জন

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ গত রাতে এনবি নিউজকে  বলেন, ‘বিএনপিকে সমাবেশ করতে হলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই করতে হবে। না করতে চাইলে নাই। নয়াপল্টনে তারা অনুমতি পাবে না। আর না পেলে সমাবেশ করতে পারবে না—এটাই তো স্বাভাবিক।’

বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দুজন নেতার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা এনবি নিউজকে  বলেন, এত দিন তো মনে হয়েছে ১০ ডিসেম্বর সরকারের পতন ঘটিয়ে দেবে বিএনপি। দলটির কিছু নেতা, কর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও এমন একটা কানাঘুষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু সরকার চাপ দেওয়ার পর বিএনপি নেতারা তাঁদের বক্তৃতায় নমনীয়তা দেখাচ্ছেন। ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ দেখাতে চায় যে এখন পর্যন্ত সরকারের পতন ঘটানোর মতো শক্তি অর্জন করতে পারেনি বিএনপি। একই সঙ্গে সরকার ও আওয়ামী লীগ না চাইলে বিএনপির পক্ষে রাজপথে সাংগঠনিক শক্তি দেখানোও সম্ভব নয়, এটাও দেখাতে চাইছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, নয়াপল্টনে বিএনপিকে সমাবেশ করতে হলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের বাধা ডিঙিয়ে তা করার প্রস্তুতি থাকতে হবে। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশ সফল করাও বিএনপির জন্য কঠিন করে দিয়েছে সরকার। কেননা, পুলিশ যে ২৬ শর্ত দিয়েছে, তা মেনে বিএনপির পক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় সমাবেশ করা প্রায় অসম্ভব। আর কমপক্ষে দুই লাখ লোকের জমায়েত করতে না পারলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ভরানো যাবে না। আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ‘সতর্ক পাহারা’র মতো বৈরী পরিবেশে বিএনপি একার শক্তিতে দুই লাখ লোক জমায়েত করাতে পারবে বলে মনে হয় না। বিশেষ করে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে, সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে মাঠে প্রবেশ করা যাবে, মাঠের বাইরে জমায়েত করা যাবে না—এসব শর্ত মেনে বিএনপি সমাবেশ সফল করতে পারবে না।

অবশ্য নয়াপল্টনে বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেওয়ার বিষয়ে সরকারের কিছু আলোচনা রয়েছে। সরকারের একজন মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবি নিউজকে  বলেন, ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি মনে হয় এখন কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছে। আর এটাই চেয়েছে সরকার ও আওয়ামী লীগ।

ওই মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির ভেতরে-ভেতরে সমাবেশ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের কোনো কোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে। নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না—এখন পর্যন্ত তা সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আগের দিন রাতে বা সন্ধ্যায় কঠিন কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে নয়াপল্টনে অনুমতি দিয়ে দেওয়ার বিষয়েও সরকারের ভেতরে কিছু আলোচনা আছে। এ ক্ষেত্রে অপ্রস্তুত বিএনপিকে শেষ মুহূর্তে নয়াপল্টনে সুযোগ দিলেও তারা বড় কিছু করতে পারবে না। এতে বিএনপিকে ছাড় দেওয়ার বিষয়ও থাকল। আবার অপ্রস্তুতও করা যাবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ এনবি নিউজকে  বলেন, ‘বিএনপি তো সমাবেশই করতে চায়, তাই না? তাহলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমস্যা কোথায়?’ তিনি মনে করেন, বিএনপি শেষ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সমাবেশ করবে।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ১০ ডিসেম্বর যা-ই হোক না কেন এবং যেখানেই সমাবেশ হোক—এ বিষয় নিয়ে ঢাকাবাসী এবং সারা দেশের মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, যা বিএনপির গণসমাবেশে স্বাভাবিকভাবেই উপস্থিতি কমিয়ে দিতে পারে।

সূত্র বলছে, বিএনপি ১০ ডিসেম্বর নিয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে চেয়েছিল। সরকার উল্টো আতঙ্ক ছড়িয়ে এবং শর্তের বেড়াজালে বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। এর ফলে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণও কমে যাবে।

এ পরিস্থিতিতে বিএনপির পক্ষ থেকে লোক বাড়াতে খালেদা জিয়া সমাবেশে থাকতে পারেন—জোরালো না হলেও এমন একটা প্রচার দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা সমাবেশে লোক টানার কৌশল হতে পারে বলে মনে করছে সরকারের সূত্রগুলো। কারণ, খালেদা জিয়ার যে শারীরিক অবস্থা, তাতে তিনি সমাবেশে যোগ দেবেন—এমনটা মনে করে না সরকার। এরপরও সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পাল্টা হুমকি দেওয়া হয়েছে যে খালেদা জিয়া আইনিভাবে সমাবেশে যোগ দিতে পারেন না। এরপরও সমাবেশে যোগ দিলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হবে।

আওয়ামী লীগের সূত্র বলছে, বিএনপি ঢাকায় সমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে। এটা ছোট সমাবেশ কিংবা সংবাদ সম্মেলন করেও দেওয়া যায়। কিন্তু বিএনপির লক্ষ্য বড় জমায়েত করে ঢাকা অচল করে দেওয়া। এর মাধ্যমে বিএনপি এটা প্রমাণ করতে চায় যে সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নেই, বিএনপি এখন দেশের জনপ্রিয় দল। অন্যদিকে সরকার ও আওয়ামী লীগ জানে বিএনপি সমাবেশের নাম করে কোনো ধ্বংসাত্মক পন্থা অবলম্বন করবে না। এমনকি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি—এমন কোনো নিশ্চিত তথ্যও নেই সরকারের হাতে। সরকার ও আওয়ামী লীগ চাইছে, বিএনপি যাতে বড় সমাবেশ না করতে পারে। সবকিছুতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছে, এটাই বোঝাতে চায় সরকার।

গতকাল রাতে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এনবি নিউজকে বলেন, বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারা সেখানেই সমাবেশ করবে।

বিএনপি এখন পর্যন্ত ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে চায়। এ ক্ষেত্রে পুলিশের অবস্থান কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘৯, ১০ তারিখ আসুক, তখন বোঝা যাবে।’

৯ ডিসেম্বর পুলিশ নয়াপল্টনে অবস্থান নেবে কি না, জানতে চাইলে ঢাকার পুলিশ প্রধান বলেন, ‘অবস্থা বুঝে আমরা ব্যবস্থা নেব।’


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  

নামাজের সময় সূচি

    Dhaka, Bangladesh
    বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪
    ওয়াক্তসময়
    সুবহে সাদিকভোর ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ
    সূর্যোদয়ভোর ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ
    যোহরদুপুর ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ
    আছরবিকাল ৩:২৫ অপরাহ্ণ
    মাগরিবসন্ধ্যা ৬:২১ অপরাহ্ণ
    এশা রাত ৭:৩৯ অপরাহ্ণ