• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

মার্কিনীরা যাদের বন্ধু, তাদের শত্রুর প্রয়োজন নেই: সংসদে মেনন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ১৪ জুন, ২০২৩ সংবাদটির পাঠক ০ জন

এনবি নিউজ : ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ‘রেজিম চেঞ্জের’ কৌশলের অংশ। তিনি বলেন, ‘তারা সেন্টমার্টিন চায়, কোয়াডে (কোয়াড্রিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ) বাংলাদেশকে চায়। বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সব কিছু করছে।’‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যারা বন্ধু, তাদের শত্রুর প্রয়োজন নেই।”

আজ বুধবার (১৪ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যারা বন্ধু, তাদের শত্রুর প্রয়োজন নেই। বেশ কিছু সময় আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তার বাগে রাখতে স্যাংশন দিয়েছে। এখন নির্বাচনকে উপলক্ষ করে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। এটা কেবল দুরভিসন্ধিমূলকই নয়, তাদের ‘রেজিম চেঞ্জের’ কৌশলের অংশ। তারা সেন্টমার্টিন চায়, কোয়াডে বাংলাদেশকে চায়।’’

মেনন বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ছিনিয়ে নিতে তারা বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল। তীব্র খাদ্য সংকটের সময় বঙ্গবন্ধুর সরকারকে বিব্রত করতে মধ্যসমুদ্র থেকে গমের জাহাজ ফিরিয়ে নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পেছনে তাদের কালো হাত ছিল। এখন আবার বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সব কিছু করছে।’

মার্কিন ইস্যুতে সরকারের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন করে আমি বলতে চাই, বাইডেন সাহেব ট্রাম্পকে সামলান। আমাদের ঘর আমরা সামলাবো। নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার সরকারকে রেখেই হবে। বিএনপির উচিত হবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া। তারেক রহমান নির্বাচন না করে ২০২৯ সালের জন্য অপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু বিএনপি এরইমধ্যে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। তার সেই স্বপ্নও পূরণ হবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, এগিয়ে যাবে।’

জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার সমালোচনা করে এই বাম নেতা বলেন, ‘হঠাৎ করেই আমরা দেখলাম জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য আইনমন্ত্রী মাঝে মাঝেই সরকারের উদ্যোগের কথা বলেন। সেই জামায়াতকে পুলিশ বেশ সমাদর করে, অন্যের সভা সরিয়ে নিতে বাধ্য করে, ১০ বছর পর প্রকাশ্য সভা করার অনুমতি দিয়েছে। এটা কীসের আলামত আমরা জানি না। এটা স্পষ্ট করে বলা প্রয়োজন—জামায়াত যুদ্ধাপরাধীর দল, ঘাতকের দল। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের রায়ে এ কথা বলেছে। এর জন্য নতুন করে আদালতের রায়ের প্রয়োজন নেই। জামায়াত কিন্তু তার অবস্থান থেকে একচুলও সরেনি। ওই সমাবেশ করে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবিরই পুনরাবৃত্তি করেছে। বিএনপি-জামায়াত একই বৃন্তের দুটি ফুল। সাপের মুখে চুমু খেলে সাপ ছোবলই মারে। আদর করে না। জামায়াত-হেফাজতের সঙ্গে তোষামোদ-সমঝোতা সেই ফলই দেবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে মেনন বলেন, ‘এই বাজেটে বাংলাদেশের বর্তমান কার্যত অনুপস্থিত। বাজেটের ধারাবর্ণনায় অর্থমন্ত্রীর প্রধান বিষয় ছিল—গত দেড় দশকের অতীতের অর্জন। আর ভবিষ্যৎ দশকের সুখ স্বপ্নের কথা। বাজেট শুনে দেখে মনে হয়নি এটা সংকটকালের বাজেট।’

তিনি বলেন, ‘সংকট এখন সর্বব্যাপী। মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ কমে যাওয়া, জ্বালানি সংকট, ডলার সংকট, নদীর পানির সংকট, সংকট কোথায় নেই? স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এই সংসদে দাঁড়িয়ে যখন বলছেন মূল্যস্ফীতি ও লোডশেডিংয়ে জনগণের জীবনে কষ্ট নেমে এসেছে, সেখানে অর্থমন্ত্রীর মূল্যস্ফীতি ৬ শতকে ধরে রাখার আশাবাদ শোনালেও কীভাবে সেখানে নামিয়ে আনবেন, তার কোনও কৌশল বা নির্দেশনা বাজেটে দেননি।’

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অভিযোগ করেন, বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে চরম দুর্বলতার কারণে জিনিসপত্রের মূল্য একেবারেই লাগাম ছাড়া। পেঁয়াজের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপেই বোঝা যায় যে বাজার নিয়ন্ত্রণে তারা আগ্রহী নন। অথবা কাউকে সুবিধা দিতে চান। ১০ দিন ধরে পেঁয়াজের মূল্য বাড়তে দিয়ে সিন্ডিকেটের হাতে বাজার ছেড়ে রেখে যখন পেঁয়াজ আমদানি করার সিদ্ধান্ত হলো, ততদিনে ভোক্তা সাধারণ মানুষ কেবল নয়, কৃষকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’

মেনন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শতভাগ বিদ্যুতায়নের যে গৌরব অর্জন করেছিলেন, সাম্প্রতিককালেই কেবল নয়, বেশ কিছু দিন ধরে দেশের বেশিরভাগ স্থানকে বেশিরভাগ সময় অন্ধকারে ডুবিয়ে রাখার মধ্য দিয়ে তাতে কালিমা লেপন করা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসে, এটাই বাস্তবতা।’

তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করা যাবে না। স্পট মার্কেটে এলএনজি’র মূল্য বেড়ে যাওয়া, আমদানিকৃত কয়লার মূল্য পরিশোধ করতে না পারার কারণে যথাসময়ে জ্বালানি আনা সম্ভব হয়নি। আর এ ক্ষেত্রে এর মূলে রয়েছে ভ্রান্ত জ্বালানি আমদানি নীতি।’

মেনন বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী প্রস্তাব করেছেন করমুক্ত সীমার নিচে আয় রয়েছে। অথচ সরকার থেকে সেবাগ্রহণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্নের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, এমন টিনধারীদের সেবা পেতে হলে ন্যূনতম ২ হাজার টাকা কর দিতে হবে। এটা নাকি তাদের জন্য গর্বের হবে। আর বড়লোকদের গর্ব খর্ব করার জন্য সম্পদ করের সীমা ৩ কোটি থেকে ৪ কোটিতে বাড়ানো হয়েছে।’

রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, ‘দেশে ডিজিটাল আইন নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। বিদেশিরাও এ নিয়ে কথা বলে। আইনমন্ত্রী স্বীকার করেছেন এই আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে। বিদেশিদের কথায় নয়, নিজ দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সাংবাদিকতার স্বাধীনতার প্রশ্নে এই আইন হয় পরিপূর্ণ বাতিল, বা নির্দিষ্ট গণবিরোধী ধারাগুলো সংশোধন প্রয়োজন। দেশের শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রেও বিদেশিরা কথা বলেন এবং মন্ত্রীরা তার জবাব দেন। কিন্তু যে শ্রমিকের জন্য আইন, তাদের সঙ্গে কথা বলেন না। এখন শ্রমিক অধিকার খর্ব করার ক্ষেত্রে গোদের ওপর বিষফোঁড়া হিসেবে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা সংক্রান্ত আইনটি বাংলা করার নামে শ্রমিকের কার্যত সব ক্ষেত্রে ধর্মঘটের অধিকার নিষিদ্ধ করে বিধান সংযোজন করা হয়েছে।’

এ টি


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

নামাজের সময় সূচি

    Dhaka, Bangladesh
    শনিবার, ১১ মে, ২০২৪
    ওয়াক্তসময়
    সুবহে সাদিকভোর ৩:৫৬ পূর্বাহ্ণ
    সূর্যোদয়ভোর ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ
    যোহরদুপুর ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
    আছরবিকাল ৩:১৯ অপরাহ্ণ
    মাগরিবসন্ধ্যা ৬:৩২ অপরাহ্ণ
    এশা রাত ৭:৫৪ অপরাহ্ণ