• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

আগুন খেয়ে ফেললো ৩ বোনকে, এলাকা জুরে চলছে কান্না

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩ সংবাদটির পাঠক ২ জন

মাসুদ রানা : গত ২৪ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেলের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মিঠুন-আরতি দম্পতির মেজ মেয়ে সাকসী দাস (১১)। ৩০ জুন ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে সারথী মারা যায়। সর্বশেষ বুধবার সকালে ঢাকায় মারা গেল হ্যাপি। পুরো পরিবার আর আশপাশ জুরে চলছে এখন কান্না আর শোকের মাতম।

পাথরঘাটার সেবক কলোনির বাসায় চার মেয়ে নিয়ে ভালোই চলছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী মিঠুন-আরতি দম্পতির সংসার। গ্যাসের চুলার আগুনে দগ্ধ হয়ে ১৯ দিনের মধ্যে তিন মেয়ের মৃত্যুতে তাদের সাজানো সংসার তছনছ হয়ে গেল।

নগরীর পাথরঘাটা বান্ডেল রোডের সেবক কলোনিতে থাকতেন পরিচ্ছন্ন কর্মী মিঠুন দাস ও আরতি দাস। গত ২০ জুন সকালে রান্নার চুলার গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হয় এ দম্পতির চার মেয়ে।

চট্টগ্রাম ও ঢাকার হাসপাতালে দুই মেয়ের মৃত্যুর পর বুধবার সকালে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে মারা যান তৃতীয় মেয়ে ছয় বছর বয়েসী হ্যাপি দাশ।

আরতি ও মিঠুন তাদের সন্তানের লাশ নিয়ে বুধবার রাতে ঢাকা থেকে ফিরেছেন চট্টগ্রামে।

মর্মস্পর্শী এ ঘটনায় নগরীর পাথরঘাটা বান্ডেল রোডের সেবক কলোনিতে বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং সেবক কলোনির বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, গত ২০ জুন সকালে আরতি ও মিঠুন দুইজনই কাজে বেরিয়েছিলেন। এসময় তাদের চার মেয়েই ঘরে ছিল। বড় তিনজনকে তারা বলে গিয়েছিলেন, তিন বছর বয়সী মেয়ে সুইটিকে দুধ খাওয়াতে।

“সকালে দুধ গরম করতে গিয়ে গ্যাসের চুলায় আগুন লেগে যায়। একটা বিকট বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে ওই ঘরে শুধু ধোঁয়া দেখতে পাই। ধোঁয়ায় চারপাশ অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। পরে তাদের চারজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়।”

সালাউদ্দিন জানান, ওই বাসার রান্না ঘরের চুলাতে একটি পাতিল দেখতে পেয়েছিল প্রতিবেশীরা। সেই পাতিলটিও পুরো পুড়ে গিয়েছিল। তবে আগুনের সূত্রপাত কিভাবে সেভাবে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

পাথরঘাটায় বসবাসরত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সংগঠন যুব কল্যাণ সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বলেন, “ছোট মেয়ে সুইটি সামান্য দগ্ধ হয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। বেশি দগ্ধ হওয়ায় ২২ জুন বড় মেয়ে সারথী দাশ (১৫) ও সেজো মেয়ে হ্যাপিকে ঢাকায় পাঠানো হয়।”

চট্টগ্রাম মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, “দগ্ধ হওয়ার পরপরই চারজনকে হাসপাতলে আনা হয়েছিল। ছোটজন ছাড়া সকলেরই শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেকারণে দুইজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। চট্টগ্রামে আইসিউতে চিকিৎসাধীন মেয়েটি মারা যায়।”

হ্যাপির লাশ নিয়ে ঢাকা থেকে ফিরেছেন তার কাকা অনিকেষ দাস। তিনি নিজেও সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী।

অনিকেষ বলেন, “দুইজনই ঢাকায় আইসিইউতে ছিল। গত ২৪ তারিখ সাকসী মারা গেল। তাকে নিয়ে আমরা চট্টগ্রাম এসে দাহ করে আবার ঢাকায় ফিরে গেছি। আশা ছিল, হ্যাপিকে বাঁচাতে পারব। কিন্তু সেও আমাদের ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে।

মঙ্গলবার রাতে হ্যাপির সাথে সর্বশেষ কথা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আইসিউতে কাউকে যেতে দিত না। এক সিকিউরিটিকে বলে গিয়েছিলাম। সে কথা বলে এবং জুস ও বিরিয়ানি খেতে চায়। বমি হওয়ার কারণে ডাক্তার বিরিয়ানি দিতে মানা করলে শুধু জুস কিনে একটু খাওয়াতে পেরেছি।”

বুধবার সকালে তার মৃত্যু সংবাদ পান উল্লেখ করে তিনি বলেন, হ্যাপিকে আর বিরিয়ানি খাওয়াতে পারলাম না।

পাথরঘাটা সেবক কলোনি নগরীর আন্দরকল্লিা ওয়ার্ডে অবস্থিত।

সেখানকার কাউন্সিলর জহরলাল হাজারি বলেন, বান্ডেল কলোনির বাসিন্দা পরিবারটি। ২০ জুন সকালে তাদের মা চকবাজার ওয়ার্ডে হাজিরার জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে যায়। চার শিশু ঘুমে ছিল। ওই ভবনের কক্ষের ভিতর আগুন লাগে।

“প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে তাদের বের করে। একজনের শতভাগ পুড়ে যায়। অন্যজনের ৬০ শতাংশ ও একজনের ৪০ শতাংশ পুড়েছিল। এমন ঘটনা খুবই মর্মান্তিক।”


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  

নামাজের সময় সূচি

    Dhaka, Bangladesh
    রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪
    ওয়াক্তসময়
    সুবহে সাদিকভোর ৪:০৭ পূর্বাহ্ণ
    সূর্যোদয়ভোর ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ
    যোহরদুপুর ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ
    আছরবিকাল ৩:২২ অপরাহ্ণ
    মাগরিবসন্ধ্যা ৬:২৫ অপরাহ্ণ
    এশা রাত ৭:৪৬ অপরাহ্ণ