• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

সীমান্তবর্তী এলাকার পাশাপাশি সংক্রমণ বাড়ছে জেলা সদরগুলোতেও

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০২১ সংবাদটির পাঠক ০ জন

এনবি নিউজ : স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেওয়া জেলা ভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ আগে থেকেই বাড়ছিল। এবার তার সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে জেলা সদর এলাকাগুলোও। ঢাকা বিভাগে শনাক্তের হার কিছুটা কমলেও, বেড়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে। গত দুই দিনের তথ্য পর্যালোচনা করে এসব জানা যায়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ৬ জুন ঢাকা বিভাগে শনাক্তের হার ছিল ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ২৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

৭ জুন শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ঢাকা বিভাগে ৫ দশমিক ০২ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ দশমিক ১৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ৩০ দশমিক ৩৩ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণ করলে জানা যায়, একদিনের ব্যবধানে শনাক্তের হার বেড়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল এবং সিলেট বিভাগে। আর ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুরে শনাক্তের হার কমেছে। জেলার তথ্য থেকে জানা যায়- এসব বিভাগের চট্টগ্রাম ও বরিশাল ব্যতিত প্রায় সব জেলা সদরের শনাক্তের হার বেড়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের শুধু নোয়াখালীতে চট্টগ্রাম জেলা থেকেও শনাক্তের হার বেশি। তাছাড়া বরিশালের পিরোজপুরে শনাক্তের ঊর্ধ্বমুখী লক্ষ্য করা গেছে।

সিলেট জেলা এবং খুলনা বিভাগের যশোর এবং সাতক্ষীরা জেলায় শনাক্তের হার বেশি। খুলনার বাগেরহাট, নড়াইল এবং কুষ্টিয়ায় শনাক্ত বাড়তে দেখা গেছে। এছাড়া কঠোর বিধিনিষেধ ও লকডাউনের আওতায় থাকা রাজশাহীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৯৫টি নমুনার বিপরীতে শনাক্ত হয়েছে ২৭০ জন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৯২ নমুনার বিপরীতে শনাক্ত হয়েছেন ৭৫ জন। নওগাঁয় ১ হাজার ১৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয়েছে ১১৯ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় (৬ জুন সকাল আটটা থেকে ৭ জুন সকাল আটটা পর্যন্ত) করোনাভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৯৭০ জন। নতুন শনাক্ত হওয়া রোগী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে নতুন শনাক্তের হারও। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাতে রোগী শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছিলেন, দেশে সংক্রমণের যে নিম্নমুখিতা রয়েছে সেটা ঈদের পর বেড়ে যাবে। আর এখন তার সঙ্গে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট যুক্ত হয়ে দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতিকে আবারও শঙ্কার মুখে ফেলেছে। আর এবারের সংক্রমণ বৃদ্ধি শুরু হয়েছে সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে। তবে ধীরে ধীরে সে সংক্রমণ পুরো দেশেই ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছে খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতর। এছাড়া সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে দেশে প্রাপ্ত নমুনার ৮০ শতাংশ ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। তাদের ধারণা দেশে ভারতীয় এই ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ ঘটেছে।

অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় চলতি জুন মাস গত মাসের মতো স্বস্তিকর যাবে না বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আর এর অন্যতম কারণ সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণের হার।

খুলনা, রাজশাহী, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে জানিয়ে অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, কেন্দ্র থেকে একটি মেডিক্যাল টিম চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইতোমধ্যে বলা হয়েছে, জরুরি রোগী ছাড়া যেন কাউকে ভর্তি নেওয়া না হয়। প্রয়োজনে পুরো হাসপাতাল করোনা সেবায় ব্যবহার করা হবে। প্রান্তিক অন্য এলাকাগুলোতেও তা-ই বলা হয়েছে।

গত এক সপ্তাহে দেশে সংক্রমণের ‘পজিটিভ রেট বেড়ে গেছে, মৃত্যু বাড়ছে ধীরে ধীরে’ মন্তব্য করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে আমাদের পজিটিভ রেট বেড়ে গেছে। যদিও দেশে সংক্রমণের হার প্রায় ৬ থেকে ৭ শতাংশে নেমে এসেছিল। কিন্তু সেটা ক্রমাগত বাড়তে শুরু করেছে। এই মাসটি (জুন) গত মাসের মতো স্বস্তিকর যাবে না বলে আশংকা করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।’

শনাক্তের হার বাড়তে থাকা জেলার সিভিল সার্জনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের সময় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অনিয়ন্ত্রিত চলাচলে বেড়েছে সংক্রমণ। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মে মাসে শনাক্তের হার ১০ শতাংশে থাকলেও জুনের এই কয়দিনে তা ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা মো হাসনাত ইউসুফ জাকী জানান, আমরা চারদিনের টেস্টের ফলাফল একসঙ্গে পাই। তাছাড়া প্রতিদিনই দুই একজন করে বাড়ে। টেস্ট কম হচ্ছে কিন্তু সন্দেহজনকভাবে যারা আসছেন তাদের মধ্যে পজেটিভ হওয়ার প্রবণতা বেশি।

সংক্রমণের হার বেড়েছে জানিয়ে নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আকতার বলেন, গত সপ্তাহেও এখানে সংক্রমণের হার ছিল ১৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ, কিন্তু গত মাসে সেটা ৯ শতাংশে ছিল।

বাড়ার পেছনে কারণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষ কোনও কিছুই (স্বাস্থ্যবিধি) মানে না -এটা স্বীকার করতে হবে। আর কেউ নিজে যদি না মানে তাহলে সেখানে প্রেশার ক্রিয়েট (বল প্রয়োগ) করে মানানো খুব টাফ। আর যারা উপসর্গহীন পজিটিভ রয়েছেন তারা পরীক্ষা করাতে আসছেন না, কিন্তু বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাদের মাধ্যমেও এটি ছড়াচ্ছে। একইসঙ্গে ওপেন বর্ডার দিয়ে মানুষ চলাচল করছে, রাতের বেলায় যাতায়াত করছে- তাদের মাধ্যমেই এটা এখন ছড়াচ্ছে বেশি, বলেন ডা. নাছিমা আকতার।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল বলেন, এটা বাড়বেই, থামানো যাবে না। এখন যদি কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি মানুষকে সচেতন এবং সম্পৃক্ত না করা হয় তাহলে সংক্রমণ আবার ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে। আর এ কথা মাথায় রেখে কোথাও কোন হেলাফেলা করা উচিত না।
এ টি


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

নামাজের সময় সূচি

    Dhaka, Bangladesh
    শনিবার, ১১ মে, ২০২৪
    ওয়াক্তসময়
    সুবহে সাদিকভোর ৩:৫৬ পূর্বাহ্ণ
    সূর্যোদয়ভোর ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ
    যোহরদুপুর ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
    আছরবিকাল ৩:১৯ অপরাহ্ণ
    মাগরিবসন্ধ্যা ৬:৩২ অপরাহ্ণ
    এশা রাত ৭:৫৪ অপরাহ্ণ